চট্টগ্রামের কাভার্ডভ্যান চালক ও হেলপারকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার দুই আসামি হলেন মো. মিরাজ হাওলাদার (৩০) ও আবু সুফিয়ান সুজন (২১)। অপরদিকে নিহত রিয়াদ হোসেন সাগর কাভার্ডভ্যানের (চট্টমেট্রো-ট-১১-৮৮১২) চালক এবং মোহাম্মদ আলী হেলপার ছিলেন। দীর্ঘ ৭ মাস ধরে নিবিড় অনুসন্ধান, গোয়েন্দা তৎপরতা ও তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে নৃশংস এই জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। মূলত মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ এলাকায় কাভার্ডভ্যানের মালামাল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড চালানো হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের ডিসি ফারুক উল হক এ তথ্য জানান। সম্মেলনে পুলিশ জানায়, গত বছরের ৩ অক্টোবর সকাল ৬টায় নগরের বড়পোল এলাকায় মনসুর মার্কেটের সামনে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি কাভার্ডভ্যান উদ্ধার করে পুলিশ। কাভার্ডভ্যানের ক্যাবিনের ভেতর সিটসহ বিভিন্ন জায়গা রক্তমাখা ছিল। কাভার্ডভ্যান উদ্ধারের পর ৪ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০ টায় পতেঙ্গা লিংক রোডের ধারে ডোবার মধ্যে কাভার্ডভ্যান চালকের বিকৃত লাশ উদ্ধার করে হালিশহর থানা। তার আগে ৩ অক্টোবর সকাল ৭ টায় মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ এলাকায় কাভার্ডভ্যানের হেলপারের লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা। ঘটনা দুটির সংশ্লিষ্টতার জের ধরে তদন্তে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। দীর্ঘ ৭ মাস নিবিড় অনুসন্ধানের পর গত ৭ মে দুপুর ২টায় নগরের লেবার কলোনী থেকে মো. মিরাজ ও আকবরশাহ বিশ্ব কলোনী থেকে আবু সুফিয়ান সুজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানায়, পরিচিত ড্রাইভার ঢাকায় মালামাল নেয়ার সময় কাভার্ডভ্যানের মালামাল ছিনতাই করবে এমন পরিকল্পনা করে মিরাজ, সুজন ও বাবু। পরিকল্পনা মোতাবেক সুজন ও বাবু নগরের নিউমার্কেট এলাকা থেকে দুটি টিপ ছোরা কিনে। মৃত কাভার্ডভ্যান চালক রিয়াদ মেশিনারিজ পণ্য নিয়ে ঢাকায় যাবে সুজন ও বাবুকে এমন তথ্য দেয় মিরাজ। পরে ২ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় সিটি গেট এলাকা থেকে কাভার্ডভ্যানে ওঠে মিরাজ, সুজন ও বাবু। পরবর্তীতে চালক ও হেলপার জোরারগঞ্জে কমলদা নামক হোটেলে ভাত খেতে গেলে মারার পরিকল্পনা করে মিরাজ, সুজন ও বাবু। মিরাজ কাভার্ডভ্যান চালক রিয়াদের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় কাভার্ডভ্যান চালানোর অনুরোধ করে। এ সুযোগে বাবু ও সুজন একসাথে চালক রিয়াদ ও হেলপার মোহাম্মদ আলীকে ক্যাবিনের পেছনে নিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। হত্যার পর হেলপারের লাশ জোরারগঞ্জ এলাকায় একটি ডোবায় ও চালকের লাশ নগরের আউটার লিংক রোডে পানিতে ফেলে যায়। তেল শেষ হয়ে যাওয়ায় বড়পুল এলাকায় কাভার্ডভ্যানটি রেখে পালিয়ে যায় আসামিরা।
Leave a Reply