প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব , রাজি না হওয়ায় অপহরণ করে নিয়ে জোর করে বিয়ে। উদ্দেশ্য একমাত্র মেয়ের বাবার অর্থ সম্পত্তি আত্মসাৎ করা। আর এ লক্ষে কালেজ ছাত্রীটিকে দেড় মাস আটকিয়ে রেখে করা হয়েছে নানা ধরনের অমানুষিক নির্যাতন। মেয়ের বাবা থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়রী ও পরে অপহরণ মামলা দিলে পুলিশ নানা কৌশল অবলম্বন করে মেয়েটিকে উদ্ধার করেছে। অপহরণকারীদের প্রস্তাব ও তাদের কথামত চলতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মেয়েটিকে আটকে রেখে প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের পাশাপাশি তাকে চেতনানাশক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হত। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারনে তাকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে। উদ্ধারের পর মেয়েটির কাছ থেকে জানা গেছে, সোহাগদল এলাকার ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের একমাত্র মেয়ে ফারজানা আক্তার কলি একাদশ শ্রেনীর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। হেলালের অর্থ ও সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে পাশের সারেংকাঠি ইউনিয়নের বিষ্ণুকাঠি গ্রামের মো. আবুল কালামের ছেলে মাইনুল ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি মেয়ের কাছে শুনতে পেয়ে হেলাল ওই ছেলের পরিবারের কাছে নালিশ করে। গত ২০ ফেব্রুয়ারী ছাত্রীটি প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে মাইনুল, তার ভাই আমান, মামা মামুন ও চাচাত ভাই কামরুল মিলে তাকে অচেতন করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। জ্ঞান ফিরে মেয়েটি দেখতে পায় তাকে একটি মাহিন্দ্রাযোগে কোথাও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় সে ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে তার বাবার কাছে ফোন দিতে চাইলে অপহরণকারীরা তার মোবাইল ও সাথে থাকা স্বার্নালংঙ্কার ছিনিয়ে নিয়ে তার গলায় চাকু ধরে তাকে চুপচাপ বসে থাকতে বলে। পরে অপহরনকারীরা তাকে খুলনার রামপালে নিয়ে গিয়ে জোর করে মাইনুলের সাথে বিয়ে দেয়। এসময় মাইনুলের পিতা আবুল কালাম ও মা মারুফা বেগমও উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তীতে মেয়েটি তার বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকৃতি জানালে অপহরণকারীরা তাকে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতনের পাশাপাশি তাকে চেতনানাশক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়াতো। এদিকে হেলাল মাইনুল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরনের মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় জামিন পেতে মাইনুল মেয়েটিকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে আদালতে তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়াতে বাধ্য করে। বর্তমানে মাইনুল ও তার পরিবার ওই মামলায় জামিনে রয়েছেন। এ বিষয়ে ওই কলেজছাত্রীর বাবা হেলাল উদ্দিন জানান, মাইনুল মাদক ব্যবসা, চুরি, নারী কেলেংকারী সহ নানা ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত। মাইনুল ও তার পরিবার আমার অর্থ সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে। এমনকি তারা জামিনে এসে অপহরণ মামলা এড়াতে আমার বিরুদ্ধে তাদের ঘরে ভাংচুরের মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। তারা আমার মেয়েকে আটকে রেখে দিনের পর দিন যে অমানুষিক নির্যাতন করেছে তাতে আমার মেয়ের জীবন আজ বিপন্নপ্রায় ।
Leave a Reply